ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়া এক ব্যতিক্রমী নাম। ক্ষমতা, চাপ কিংবা ভয়-কোনোটির কাছেই তিনি সহজে আপস করেননি। ব্যক্তিগত শোক থেকে শুরু করে দীর্ঘ রাজনৈতিক লড়াই-সবখানেই তার দৃঢ়তা তাকে আলাদা করে চিহ্নিত করেছে।

১৯৮১ সালের ৩০ মে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হলে খালেদা জিয়া ছিলেন রাজনীতির বাইরে থাকা একজন গৃহবধূ। দুই সন্তানকে নিয়ে হঠাৎ করেই তাকে দাঁড়াতে হয়েছিল ইতিহাসের কঠিন মোড়ে। স্বামীর মৃত্যুর পর বিএনপি যখন দিশেহারা, তখনও তিনি রাজনীতিতে আসতে আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু দলের অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদেই এক পর্যায়ে তিনি সামনে আসেন।

১৯৮২ সালে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার পর অল্প সময়ের মধ্যেই নেতৃত্বের কেন্দ্রে পৌঁছে যান খালেদা জিয়া। সামরিক শাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে আপসহীন আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে। বারবার গ্রেফতার, কারাবাস ও দমন-পীড়নের মুখেও তিনি আন্দোলন থেকে কখনো সরে যাননি।

১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পর প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা জিয়া। পরবর্তী সময়ে দুই দফা রাষ্ট্রক্ষমতায় থেকেছেন। তবে ক্ষমতার বাইরে থেকেও তার লড়াই থেমে থাকেনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মামলায় কারাবন্দি হলেও তিনি কখনো দেশ ছেড়ে যাননি, বিদেশে আশ্রয় নেননি।

রাজনৈতিক চাপ, নির্যাতন, কারাবাস, অসুস্থতা ও নিঃসঙ্গতার মধ্যেও খালেদা জিয়া নিজের অবস্থান থেকে সরে আসেননি। তিনি বিশ্বাস করেছেন-এই দেশের মাটিতেই তার লড়াই, এই দেশের মানুষের সঙ্গেই তার ভবিষ্যৎ।

আপসহীন এই সংগ্রামের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে গৃহবধূ থেকে রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রে পৌঁছানোর যে যাত্রা এই যাত্রা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।